২৪খবরবিডি: 'আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিকে এখন ছাড় দেওয়া হলেও আগামী ডিসেম্বরে আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। ডিসেম্বরে খেলা হবে, প্রস্তুত হয়ে যান। সে সময় রাজপথ কেবল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির দখলে থাকবে, বিএনপির দখলে থাকবে না।'
''আগামী ১২ ডিসেম্বরের পর খালেদা জিয়ার কথায় দেশ চলবে'— সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ওবায়দুল কাদের এমন হুঁশিয়ারি দেন। শনিবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর বাড্ডায় ঢাকা মহানগর-উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এমন মন্তব্য করেন। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চিন্তা মাথা থেকে নামানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূত মাথা থেকে নামান। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আদালত বাতিল করে দিয়েছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার জাদুঘরে চলে গেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর কখনো ফিরে আসবে না। সমাবেশে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের উদ্দেশ্যে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, এ দেশের আর একটি মানুষের ওপর আঘাত হলে শত মানুষের আঘাত নেওয়ার জন্য আপনাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। যত ষড়যন্ত্র-বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করুন না কেন আমরা তা সফল হতে দেব না। মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা এ দেশে অগ্নিসংযোগ করেছেন, বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছেন, দেশে লুটপাট করেছেন। এমনকি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন।'
'আওয়ামী লীগ করার অপরাধে অনেক মানুষের হাত-পা কেটেছেন, বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছেন— দেশের মানুষ বিএনপির এই অপরাজনীতি ভুলে যায়নি। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। জনগণকে নিয়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৪ বছর দেশ পরিচালনা করছেন, দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখেছেন। 'সরকার যে সফলভাবে দেশ পরিচালনা করছে তা বিএনপির সহ্য হয় না।
'আগামী ডিসেম্বরে বিএনপিকে রাজপথে কোনো ছাড় নয়' : কাদের
তাই তাদের ভালো লাগার ওষুধ দিয়ে তাদেরকে ভালো লাগাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের শক্তির ওপর আঘাত এলে পাল্টা আঘাত দেওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের সবসময় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি। এদিকে আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, সমাবেশের নামে তারা যদি আবার কোনো উশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়, তাহলে তাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে আবার আমরা কেরানীগঞ্জের কারাগারে দেখতে পাব।'
'সেটাই হলো তার যথাযথ স্থান। দেশ থেকে পালানো তারেক রহমানের নির্দেশে যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, ঢাকাবাসী তাদেরকে শক্ত হাতে প্রতিহত করবে— এ বিশ্বাস আমাদের রয়েছে। শনিবার বিএনপি-জামায়াতের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, নৈরাজ্য-সহিংসতা ও আগুন সন্ত্রাসের প্রতিবাদে বাড্ডায় শান্তি সমাবেশ করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। সমাবেশে এত বেশি নেতাকর্মী জড়ো হতে থাকেন যে, একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে প্রগতি সরণি সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। বিকেলের মধ্যে বাড্ডার আশপাশে কয়েক হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতি দেখা যায়। পরে প্রগতি সরণি সড়ক বন্ধ করে দিলে ভোগান্তিতে পড়েন অফিস থেকে ফেরা সাধারণ মানুষ। যুমনা ফিউচার পার্ক, নর্দা, শাহজাদপুর, নতুন বাজার, বাড্ডা, রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এর প্রভাব পড়ে ঢাকার অন্য রাস্তাগুলোতে। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশ বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহ ও মহানগর নেতারা।'